ডেস্ক রিপোর্ট: মানিকগঞ্জে বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (সাধারণ শাখা) সাবিহা সুলতানা ডলি। অভিযোগ উঠেছে, এ সময় সংবাদ প্রকাশের জন্য ছবি তোলায় পুলিশের মাধ্যমে সাংবাদিকের মোবাইল নিয়ে সেগুলো ডিলিট করেন তিনি।
আজ রোববার বিকেলে মানিকগঞ্জের ওয়ারলেস গেট এলাকায় পালস ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরিতে অভিযানের সময় এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী সাংবাদিকের নাম আসিফ খান মনির। তিনি জাতীয় দৈনিক ‘যায়যায়দিন’ পত্রিকার মানিকগঞ্জ জেলার প্রতিনিধি।
সাংবাদিক আসিফ খান মনির বলেন, ‘বেসরকারি হাসপাতালে মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হবে জানতে পেরে ওই টিমের একজন প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি আমাকে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে যেতে বলেন। এরপর সেখানে গিয়ে সংবাদ প্রকাশের উদ্দেশ্যে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সময় আমার মোবাইলে দুই থেকে তিনটি ছবি ধারণ করি। সে সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাবিহা সুলতানা ডলি আমার পরিচয় জিজ্ঞাসা করেন। তখন আমি সাংবাদিক পরিচয় দেই। এরপরও তিনি উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের আমার মোবাইল নিয়ে নেওয়ার ও ছবিগুলো ডিলিট করার নির্দেশ দেন। পরে পুলিশ সদস্যরা আমার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে ছবিগুলো ডিলিট করে দেন। ছবি তোলায় নিষেধাজ্ঞার কারণ জানতে চাইলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাবিহা সুলতানা ডলি আমাকে বলেন– ছবি তুলতে হলে ডিসি স্যারের লিখিত অনুমতি নিয়ে আসেন।’
এ বিষয়ে জানতে মোবাইলফোনে কথা হয় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাবিহা সুলতানা ডলির সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ছবি তোলার আগে এডিএম (অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক) স্যার অথবা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট স্যারের অনুমতি নিয়ে এলে ছবি তোলা অ্যালাউ করব।’
পুলিশ সদস্যদের দিয়ে সাংবাদিকের মোবাইলফোন কেড়ে নিয়ে ছবি ডিলিট করার বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো উত্তর না দিয়েই তিনি ফোনকল কেটে দেন।
এদিকে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক অতীন্দ্র চক্রবর্তী বিপ্লব বলেন, ‘মোবাইল কোর্ট একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়া। এখানে ছবি তোলার ক্ষেত্রে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। সাংবাদিকদের ছবি তুলতে যারা বাধা সৃষ্টি করেছে তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা প্রয়োজন।’
মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রেহানা আক্তার বলেন, ‘মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সময়ে সাংবাদিকদের ছবি তোলার ক্ষেত্রে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই, অনুমতিরও প্রয়োজন নেই। যিনি সাংবাদিকদের ছবি তুলতে নিষেধ করেছেন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি দেখছি।’
সাংবাদিকদের বাধার দেওয়ার বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন মোয়াজ্জেম আলী খান বলেন, ‘আজকের অভিযানের বিষয়টি সবাইকে জানানোর জন্য সাংবাদিকদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়। আমি যেহেতু ঘটনাস্থলে ছিলাম না, সাংবাদিকদের বাধা দেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে আমি যেটা জানি মোবাইল কোর্ট পরিচালনার ক্ষেত্রে সাংবাদিকরা উপস্থিত থাকবে এবং পুরো বিষয়টি জাতির সামনে নিউজের মাধ্যমে তুলে ধরবে। এমন ঘটনা কেন ঘটল, আমার জানা নেই। আমার মনে হয় এখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো গ্যাপ থাকতে পারে।’